মধ্য আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে একদিন আগেও করোনাভাইরাসে মোট মৃত্যু দেখানো হচ্ছিল ২ লাখ ১ হাজারের কিছু বেশি। শনিবার এক সংশোধিত তথ্যে করোনায় প্রাণহানি ৩ লাখ ২১ হাজারের বেশি বলে জানায় মেক্সিকান সরকার। এ সংখ্যা আগের সংখ্যার চেয়ে ৬০ শতাংশ বেশি।
ফলে চলমান মহামারিতে মৃত্যুর দিক থেকে ব্রাজিলকে ছাড়িয়ে দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ এখন মেক্সিকো। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় প্রাণহানি ৫ লাখ ৬২ হাজারের বেশি। ব্রাজিলে এ সংখ্যা ৩ লাখ ১১ হাজারের মতো।
ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, অনেকটা গোপনেই সংশোধিত তথ্য প্রকাশ করেছে মেক্সিকো। এতে মহামারির শুরু থেকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষার ফল অনুযায়ী মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ৯৪ হাজার ২৮৭ বলে জানা যায়। অথচ সংশোধনের আগে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি এ সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৭১।
এরপর ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষায় ভাইরাসটিতে আরও প্রায় ২৭ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
নতুন প্রতিবেদনে মেক্সিকোতে জানুয়ারি মাসে করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রাণঘাতী রূপও স্পষ্ট। আগের তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরের শেষে দেশটিতে করোনায় প্রাণহানি ছিল সোয়া ১ লাখের কম, সংশোধিত তথ্যে যা প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার। এরপর মাত্র দেড় মাসে মারা গেছেন ৭৫ হাজার মানুষ।
মেক্সিকোতে অপর্যাপ্ত পরীক্ষা এবং হাসপাতালে শয্যাসংকটের কারণে করোনা শনাক্ত ছাড়াই বাড়িতে অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। এই মৃত্যুগুলো যোগ হলে দেশটিতে ছোঁয়াচে এই ভাইরাসে প্রকৃত প্রাণহানি বহুগুণ বেড়ে যাবে বলে শঙ্কা স্বাস্থ্যবিদদের।
তারা বলছেন, এখন মহামারি পরিস্থিতির স্বচ্ছ চিত্র নিশ্চিতের একটিই উপায়। আর তা হলো, অন্যান্য বছরের সঙ্গে গত এক বছরে প্রাণহানির পার্থক্য নির্ণয় করা এবং মৃত্যুর সনদে উল্লেখিত মারা যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখা।
২০১৯ সালের তুলনায় মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত অতিরিক্ত ৪ লাখ ১৭ হাজার মৃত্যু হয়েছে বলেও ধারণা করছে মেক্সিকান সরকার।
এ ছাড়া মৃত্যুসনদ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, অতিরিক্ত প্রাণহানির ৭০ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যেই করোনাভাইরাসে উপসর্গ বিদ্যমান ছিল।
মহামারির মধ্যে ধারণক্ষমতার কয়েক গুণ রোগী সামলাতে হচ্ছে হাসপাতালগুলোতে। পর্যাপ্ত ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও লোকবলের অভাবে করোনায় আক্রান্তদের পাশাপাশি অন্যান্য রোগের যথাযথ চিকিৎসা না হওয়ার ফলেও মারা যাচ্ছেন অনেকে।